স্বপ্নপুরি দিনাজপুর - টুরিস্ট গাইড ২৪
স্বপ্নপুরী দিনাজপুর
স্বপ্নপুরীর প্রবেশ পথ |
অবস্থান
স্বপ্নপুরী রংপুর বিভাগের দিনাজপুর
জেলার নবাবগঞ্জ
উপজেলার আফতাবগঞ্জে অবস্থিত। যা উপজেলা সদর থেকে ১৫
কি:মি: উত্তর দিকে ৯ নং কুশদহ ইউনিয়ন পরিষদের অধীন খালিপপুর মৌজার মধ্যে পরে ।
ইতিহাস
কুশদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব মো:
দেলওয়ার হোসেন তার অক্লান্ত শ্রম ও অর্থের বিনিময়ে ১৯৮৯ সালে স্বপ্নপুরীর কাজ শুরু করেন। বর্তমানে দিনাজপুর
৬আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মো:
শিবলি সাদিক এম. পি'র অধীনে এটি চালু আছে।
আয়োজন
এখানে বিভিন্ন রাইডস, চিড়িয়াখানা, রেস্ট হাউজ, বাগান, হ্রদ, বিশ্বের
বিভিন্ন প্রজাতির মাছ , 'রংধনু' আর্ট গ্যালারি, 'মহা মায়া ইন্দ্রজাল' নামে জাদুর গ্যালারী এবং কেন্দ্রীয়
পিকনিকের একটি কেন্দ্র আছে। ভি,আই,পি, রেস্ট হাউস ১০টি, মধ্যম শ্রেণীর ১৪ টি এবং অন্যান্য ০৮ টি
রেষ্ট হাউস নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে আরও রেষ্ট হাউস নির্মাণসহ স্বপ্নপুরীর
উন্নয়নের কাজ চলছে। কেবলকার, ঘোড়ারগাড়ী, চিড়িয়াখানা, কৃত্রিম চিড়িয়াখানা, কৃত্রিম মস্য জগত , রেষ্টুরেন্ট
আছে। এখানে কৃত্রিম মাছ এবং বিভিন্ন প্রাণীদের সঙ্গে, বিশ্বকে খুঁজে
পেতে পারেন। বিনোদনের জন্য রয়েছে ছোট অনেক রাইডস। কৃত্রিম লেকে স্পিডবোটে চড়ে
নিতে পারেন দুরন্ত অভিজ্ঞতা। প্রাণিজগতের, এমি, মোরাল, ডাইনোসর, কাব্যপ্রতিভা এবং অনেক অন্যান্য প্রাণীর
মতো কিছু প্রাণীর কৃত্রিম মূর্তিও রয়েছে। ভাস্কর্য এবং চিত্রকলার বিভিন্ন ধরনের
জন্য 'রংধনু' আর্ট গ্যালারি,. 'মহা মায়া
ইন্দ্রজাল' এ, জাদু উপভোগ করতে পারেন। বিভিন্ন ধরনের প্রাণী দ্বারা
চিড়িয়াখানা পূর্ণ । কেউ পরিবার সহ কৃত্রিম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং কার্যক্রম এই
পর্যবেক্ষক সঙ্গে তার পুরো দিনে ভোগ করতে পারেন। এখানে প্রতি বছর প্রচুর দর্শক আসে।
শৈল্পিক ভাস্কর্য
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাস্কর্য |
·
একটি
কৃত্রিম হ্রদ
·
একটি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাস্কর্য
·
ভাস্কর্য
পরী
·
ভাস্কর্য
ডাইনোসরের
স্বপ্নপুরীর বিবরণ
ভেতরের রাস্তা |
১৯৮৯ সালে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাফগঞ্জে এক মৃত জলাশয়কে পিকনিক স্পটে রূপান্তরিত করে
তাতে প্রাণ দেয়া হয়েছে। নাম দেয়া হয়েছে স্বপ্নপুরী। ১৯৯০ সাল থেকে এর বাস্তবায়ন
শুরু হয়। ইচ্ছে হলে আপনি ইট-পাথরের যান্ত্রিক কর্মব্যস্ততা থেকে ক্লান্ত, বিপর্যস্ত দেহ-মনকে এই পিকনিক স্পষ্ট
স্বপ্নপুরীতে ক্লান্তি জুড়াতে, আনন্দ-উল্লাস করে
বিসর্জন দিতে পারেন মানসিক বিপর্যস্ততাকে। জানতে পারেন জীব-জগতের, উপলব্ধি করতে পারেন আপনজনদের। আত্মপলব্ধির মধ্য
দিয়ে বিকাশ ঘটাতে পারেন মানবতার, অবারিত আত্মিক
উন্নয়নের দ্বার সভ্যতাকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে পারেন। দেশ-বিদেশের বহু বিশিষ্ট
ব্যক্তি এই স্বপ্নপুরী দর্শনে মুগ্ধ হয়েছেন। মোট ৪০০ বিঘা জমির ওপর নির্মাণ করা
হয়েছে স্বপ্নপুরীর স্বপ্নের জগত। দিনাজপুর সদর থেকে মাত্র ৫২ কিলোমিটার আর ঢাকা
থেকে ৩২০ কিলোমিটার দূরত্বে স্বপ্নপুরী অবস্থিত।
সুবিশাল এলাকা, তুলনাহীন
প্রাকৃতিক এবং নৈসর্গিক পরিবেশ। সমগ্র এলাকা জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার গোলাপ, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, লিলি, রজনীগন্ধা, গ্লোবাল, কসমস, গাদা-সূর্যমুখী ইত্যাদি ফুলসহ বিভিন্ন প্রকার
ঝাউগাছ, ইপিলইপিল, ক্যাকটাস, ওইপেং, ক্রিসমাসট্রি, ঘনসবুজ ঘাসে ঘেরা বাগানের গাছের ডালে বসেছে
হাজারো পাখির মেলা, যা প্রকৃতি প্রেমিক
সৌন্দর্যপিপাসু পর্যটক ও পরিব্রাজকদের মনোরঞ্জন এবং বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হতে
পারে।
শিক্ষামূলক ভ্রমণ স্বপ্নপুরী পর্যটন কেন্দ্র ছাত্রছাত্রী ও
আনন্দ পিপাসুদের জন্য ভিন্ন মাত্রায় সজ্জিত। যার প্রমাণ স্বপ্নপুরীতে রয়েছে শিশু
পার্ক, জীবন্ত এবং কৃত্রিম চিড়িয়াখানা।
স্বপ্নপুরীর প্রবেশ দ্বারে দণ্ডায়মান বিশাল আকৃতির দুটি
পরীর প্রতিকৃতি যেন পর্যটকদের স্বাগত জানাতে সদা প্রস্তুত।
ডায়নোসর |
ঝাউবীথি আর পাম বৃক্ষের মাঝে স্থাপিত মিলেনিয়াম ২০০০-এর
প্রতীক। পর্যটকদের নামাজ পড়ার মসজিদ এবং কারুকার্যময় অজুখানা। বিশ্বকবি
রবীন্দ্রনাথ ও জাতীয় কবি নজরুলের ভাস্কর্য। চোখে স্বাপ্নিক বিস্ময়তা আর অন্তরে
মুগ্ধতা নিয়ে স্বপ্নপুরীর লেকে স্পিড বোটে জলবিহারে মেতে ওঠা। লেকের ওপরে তৈরি করা
হয়েছে কেবল কার। পর্যটকদের গোসল করার জন্য সুসজ্জিত শাপলা ঘাট। সুবিশাল
স্বপ্নপুরীর স্থানে স্থানে রয়েছে চমৎকার চমৎকার বিশ্রাম ছাউনি। অপরূপ
সৌন্দর্যমণ্ডিত স্বপ্নপুরী বাগানের ঘনপাতা, লতাগুল্ম উথিত
ঢেউ বেষ্টনীর মাঝে বাগান বিলাসের সমারোহ। এ যেন নিপুণ হাতের পরশে বাগ-বাগিচার
সৌন্দর্যে পেয়েছে নতুনরূপ। এসব বাগান মন-মননকে করে তোলে আকাশচারী ও স্বপ্নময়।
স্বপ্নপুরীর রাস্তাগুলো একেকটি এক অভিন্ন। একটি রাস্তার দুই পাশে উদ্বাহু
হংসমিথুনের দল। আরেকটি রাস্তার দু’পাশে মাছ আকৃতির
ফুলের টপ দিয়ে সাজানো হয়েছে। কৃত্রিম চিড়িয়াখানায় প্রবেশের জন্য তৈরি করা হয়েছে
চোখ ধাঁধানো রাস্তা। জীবন্ত চিড়িয়াখানায় প্রবেশের প্রধান ফটকটি বাংলার ঐতিহ্য, বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখাকৃতির এ
ফটক পর্যটকদের শিহরিত করে ও রোমাঞ্চিত করতে প্রস্তুত।
দোলনা |
বাংলাদেশের কলা গাছের অনুুরূপ অতিথি বৃক্ষ পান্থপথ। দুর্লভ
এ বৃক্ষ স্বপ্নপুরীর জীবন্ত চিড়িয়াখানায় সংযোজন করেছে নতুন সৌন্দর্য মাত্রা। সব
মিলিয়ে বলা যায় কোন পর্যটক যদি একবার স্বপ্নপুরীতে যান তাহলে সত্যি স্বপ্নের মাঝে
হারিয়ে যাবেন। নিজেকে পশ্ন করবেন, এটা আমি কোন জগতে
এসেছি।
প্রবেশ মূল্য বাস-মিনিবাস (যাত্রীসহ) ৪০০ টাকা।
মাইক্রোবাস-পিকআপ (যাত্রীসহ) ২০০ টাকা। কার-জিপ টেক্সিক্যাব
যাত্রীসহ ১০০ টাকা। গাড়ি ছাড়া গেলে জনপ্রতি ২০ টাকা।
স্বপ্নপুরীর বাংলো ভাড়া নীলপরী ৩০০ টাকা (প্রতি ডবল রুম), রজনীগন্ধা ৪০০ (প্রতি ডবল রুম), নিশি পদ্ম ১৫০০ টাকা (তিন রুমসহ বাংলো), চাঁদনী ৫০০ টাকা (প্রতি ডবল রুম), সন্ধ্যা তারা ১০০/১৩০০ টাকা (প্রতি ডবল নন এসি
ও এসি রুম)
ঢাকা থেকে বুকিং ব্যবস্থা ঢাকা থেকেও স্বপ্নপুরীর মোটেল বা
বাংলো বুকিংয়ের সুবিধা আছে। ঠিকানা : হোটেলের সফিনা, ১৫২ হাজী ওসমান
গনি রোড, আলুবাজার ঢাকা। ফোন : ৯৫৫৪৬৩০-৯৫৬২১৩০।
স্বপ্নপুরীতে রয়েছে অল্প দামে খাবারের ব্যবস্থা : ভাত, সবজি, ডি, ডাল ১৫ টাকা, ভাত, সবজি, মাছ, ডাল ২০ টাকা ও ভাত, সবজি মুরগি, ডাল ৩০ টাকা।
এছাড়াও স্বপ্নপুরীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা পর্যটন সুবিধা দিতে
একটি আধুনিক হোটেল, চাইনিজ
রেস্টুরেন্ট, মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে স্বতন্ত্র স্পট, পাখির রাজ্য, বেলকার, রোপকার, মানবিক চৈতন্যে
ভাস্কর্য শিল্প ইত্যাদি নির্মাণের পরিকল্পনা মোতাবেক, যার নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।
স্বপ্নপুরী ভ্রমণে সব ভ্রমণ পিপাসুকে আমন্ত্রণ।
Comments
Post a Comment